সারাটা জীবন
ছিন্নমূলই রয়ে গেলাম
কোথাও
দুদণ্ড বসা হল না, মনের
মতন।
সেই
কোন শৈশবে নটবর বলেছিল
পশ্চিমের
মেঘ দেখে ভয় পেয়ো না
ও
মেঘে বৃষ্টি হয় না শুধু রঙে
রঙে ছবি আঁকে
উত্তর
দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম কোন মেঘই
আমায় রেহাই দিল না
তারা
বারবার আমার জীর্ণ ছাদের ফোঁকর
দিয়ে জীবনটা ভাসিয়ে গেল।
ইচ্ছামত।
দেখ
না কত
লোক ধর্ম কর্ম নিয়ে কি নিশ্চিন্ত
জীবন কাটিয়ে যায়।
আমি
যখনই সেখানে ডুব দিয়েছি
ঈশ্বর
এসে আমায় বলেছে, রে
মূড়
জীবনটা
খেলায় কাটিয়ে দিবি ?
কোথায়
খুঁজিস আমায় চোখ মেলে তাকা
সবই তো
আমি
আমারই
বুকে পদচিহ্ন এঁকে
আমাকে খুঁজিস তুই এখানে ওখানে?
ধিক
তোকে
ধিক,
বৃথারে তোর
জীবন।
আমি
গিয়েছি রমজান আলীর কাছে
সে
আমার ভাষা বোঝে না।
গিয়েছি
হাসান
শেখের বাড়ি,
আড়
চোখে তাকিয়ে সে বলেছে
তুমি
যে বড্ড বেমানান এই চাঁদের
হাটে তা কি বোঝো না?
পুরোহিত
ভট্টাচার্য আমার পুজো দিল না
বললে
ওরে অবিশ্বাসী কেন ব্যর্থ
প্রয়াস?
ছিন্নমূল,
ভাসমান
নদীর ভাঙ্গাচরে শুধু একুল
থেকে দুকূল
এই
আমার
ইতিহাস।
তবু
আক্ষেপ নেই মেঘে না চাইতেই
জল
ঈশ্বর
আমায় দুহাত ভরে দিয়েছেন
তার আশীর্বাদ
আমারই
জন্য দিয়েছেন সমুদ্রের বুকে
ঢেউ
পাহাড়ের
উচ্চুঙ্গ
চূড়ায় শ্বেত শুভ্র বরফ
আমারই
জন্য হলুদ হয়েছে সর্ষের মাঠ
অরন্যের
গভীরতা, যেখানে
সূর্যের আলো চুপিচুপি ঢোকে।
গ্রহ
তারা নক্ষত্র চলেছে সুনিদৃষ্ট
পথে
যেন
আমি ভালো থাকি।
তবু
অভিযোগ কমেনি আমার
একটু
সুনামি একটু ভূমিকম্প,
অভিযোগের
পাল্লাটা কোনদিনই কমলো না
হালকা
হলো না হিংসা হানাহানি বিদ্বেষ
আর অহংকার
এগুলো
ভাসিয়ে ভালোবাসার আলোয়
জ্বলে উঠতে পারলাম না
নির্জলা
আনন্দে কাউকে প্রশংসায় ভাসাতে
পারলাম না
ঈর্ষার
জ্বালা, নিন্দা,
অপমান,
কি আমার
সঞ্চয়?
ছিন্নমূল,ব্যর্থ
জীবন।