Wednesday, August 5, 2020

শেষ অন্ধকার

আমেরিকাতে কেউ বুড়ো হয় না

তা হোক না ৬০ কিম্বা ৭০

চুলে রং, বোটক্স, আর ফেসলিফটে

এ দেশ চিরযৌবনা আর চিরসতেজ।।

 

এখানে ৪০ হলেই বয়সটা থমকে দাঁড়ায়

ঘড়ির কাঁটা পেছনে দৌড়ায়

প্রথম কয়েকটা বছর থমকে থাকে

তারপর দ্রুত গতিতে পিছনে গড়ায়।।

 

আমেরিকান ড্রীম; সে যেন দিল্লীকা লাড্ডু!

স্বপ্নাবিষট, মোহাছছন্ন, অসংখ্য মানুষ

চলেছে ছুটে, দিনে, রাতে, নিদ্রায় জাগরনে

অন্তহীন পথ চলা, শুধু চলা আর চলা।।

 

কি দূর্দ্দান্ত সে ছোটারে বাবা, ছুটছি কোথায়

দেখবার ও সময় নেই কারো

হুমড়ি খেয়ে যে পড়ল পেছনে

পায়ের তলায় তাকে মাড়িয়ে চলা, অনির্বার।।

 

চোখে ঘুম নেমে আসে তবু নেই ক্লান্তির অবকাশ

আছে এনার্জি বুস্টার, ওয়ান শট, স্বল্প কালিন

কিছুই চিরন্তন নয় যে এখানে, স্বামি-স্ত্রী, বন্ধু, পিতা-পুত্র

সত্য শুধু বৃদ্ধাশ্রম, জীবনের শেষ  অঙ্গীকার।।

 

এরপর একদিন শুধু অন্ধকার, চারিদিকে আলো

নিরন্তর জীবনের খেলা, অস্থিরতা, উন্মত্ত সঙ্গীত,

তারি মাঝে নামে নিকষ কালো অন্ধকার,

শেষ না হতেই শেষ হয় জীবনের খেলা।।

 

প্রশ্নটা থেকেই যায়, শুধু এই ছিল লেখা?

এরই  তরে এতকিছু, বিদ্বেষ? হানাহানি, হিঁসা?

কর্কশ রুঢ় শব্দে জীবনটা বিষিয়ে তোলা?

হিসেবের খাতা শুধুই গরমিলে মেলানো?

 

আজ প্রদোষকাল, নিস্তেজ দুটি আঁখি শুধায় মৃদু স্বরে,

কোথায় হারাল জীবনের এতটি বছর?

কোথায় হারাল সেই দম্ভ? অসহায় ক্রন্দসির অশ্রুজল

ভ্রূক্ষেপে অবহেলায় পদ দলার সেই  ক্ষণ?

 

 

শেষ অন্ধকার নেমে আসার আগে মনে হয়

যদি বলে যেতে পারতাম, “ক্ষমা করো”

অন্তহীন তিক্ততা যদি পারতাম মুছে দিতে স্নেহে, মমতায়

শুধু যদি জানতাম কোথায় জীবনের শেষ রেখা টানা,

বিধাতার কাছে তাই গুঢ় অভিমান

শেষ অন্ধকার নেমে আসার আগে।।